কুমিল্লায় ছোট ভাইকে হত্যা করে নিজ ঘরে পুতে রাখে লাশ!

জাহাঙ্গীর আলম ইমরুলঃ কুমিল্লার দেবীদ্বোরে আপন ছোট ভাইকে হত্যা করে নিজ ঘরের মাটির নীচে চাপা দেয়ার ১০ দিন পর মাটি খুঁড়ে অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোহেল মিয়া (৩২) নামের এক যুবকের মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ ভিংলাবাড়ী গ্রাম থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে দেবীদ্বার থানা পুলিশ।

নিহত সোহেল দক্ষিণ ভিংলাবাড়ী গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ নিহত সোহেলের ভাবি রোজিনা বেগমকে আটক করেছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত ৩০ আগস্ট রাতে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথাকাটির এক পর্যায়ে বড় ভাই ইব্রাহীম ছোট ভাই সোহেল মিয়াকে লাঠি দিয়ে পিঠিয়ে গুরুতর আহত করে।

ওই ঘটনায় সোহেলের মৃত্যু হলে লাশ বস্তাবন্ধি করে একটি পরিত্যাক্ত ঘরের মেঝেতে গর্ত খুড়ে পুঁতে রাখে বড় ভাই ইব্রাহীম। এ ঘটনার ১০দিন পর সোহেলকে খুঁজে না পেয়ে নিহতের ভাগিনা মাইনুদ্দিন আহম্মেদ বড় ভাই ইব্রাহীমের কাছে সোহেল কোথায় আছে জানতে চান।

এ সময় ঘাতক ইব্রাহিম জানান ‘সোহেলকে কুমিল্লায় একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে দেওয়া হয়েছে’। মাদক নিরাময় কেন্দ্রের নাম জানতে চাপ দিলে ইব্রাহিম বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন ইব্রাহিমের স্ত্রী রোজিনা বেগমকে চাপ দিলে সোহেলকে হত্যার পর লাশ পুঁতে রাখা কথা শিকার করে।

খবর পেয়ে দেবিদ্বার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। এসময় পুলিশ ভাবি রোগিনা বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটক রোজিনা বেগম জানান, সোহেল তাকে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। ঘটনার দুইদিন আগে (২৮আগস্ট) সোহেল আমার সাথে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করেন।

আমি এ বিষয়টি আমার স্বামী ইব্রাহীমকে জানালে তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে কথাকাটি ও বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে ইব্রাহীম তার ছোট ভাই সোহেলকে মারধর করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

তবে তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি স্পর্শকাতর, সোহেল একাধিক বিয়ে করলেও বর্তমানে তার কোনো স্ত্রী নেই। সোহেলের প্রথম স্ত্রীর সংসারে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে আছে। সোহেলের বড় ভাই ইব্রাহিমের স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের জের ধরে ঘটনার দিন (৩০ আগস্ট) রাতে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে ইব্রাহিম কোদালের বাট দিয়ে সোহেলের মাথায় আঘাত করলে সে লুটিয়ে পড়ে। পরে ইব্রাহিম ও তার স্ত্রী মিলে নিজ ঘরের মেঝেতে মাটি খুঁড়ে সোহেলের লাশ গুম করে রেখেছিল।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জহিরুল আনোয়ার  জানান, ইব্রাহীমের স্ত্রী রোজিনা বেগম জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে তার স্বামী ইব্রাহীম মিয়া জড়িত বলে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্ধী দিয়েছেন। এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানায় একটি হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে এবং ইব্রাহীমকেও গ্রেপ্তারের  প্রক্রিয়া চলছে।

Share this post

PinIt
scroll to top