প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অমান্য করে আবারো মুরাদনগরে চলছে সরকারী খাল দখল করে ভবন নির্মাণের কাজ। উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের আওতাধীন হায়দরাবাদ মৌজা। সেখানের খাস খতিয়ানের খাল দখল করে পাকা ভবণের নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিপূর্বে এই দখলীয় কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসন।
কিছু দিন কাজ বন্ধ রাখার পর গত বৃহস্পতিবার থেকে আবারো দখলদার বাহিনী প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই স্থাপনা নির্মাণ কাজ করে চলছে।এ নিয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বহী অফিসারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও গতকাল শনিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, ইতিপূর্বে মুরাদনগরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) সরকারি খাল দখলে জড়িত ছয় ব্যক্তিকে অবৈধ স্থাপনা অপসারণের নোটিশ দিলেও তা গত ১১মাসেও কার্যকর হয়নি। বরং চক্রটি দীর্ঘ এ সময়ের মধ্যে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ধীরে ধীরে অবৈধ পাকা স্থাপনা নির্মাণের কাজ চালিয়ে আসছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবারো নিষেধাজ্ঞা জারি করলে কিছু দিন বন্ধ রাখলেও গত বৃহস্পতিবার থেকে আবারো নির্মাণ কাজ চলছে। স্থানীয় সাংসদ ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুণের নাম ব্যবহার করা হলেও তিনি কিছুই জানেন না বলে স্থানীয়রা জানান। মুরাদনগর উপজেলার হায়দরাবাদ সামছুল হক কলেজের সীমানা-ঘেঁষে চলমান খাল দখল করে মার্কেট নির্মাণ করছে।
বিষয়টি নিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ মাহবুব আলম জানান, প্রকাশ্যে সরকারী খাল দখল কওে কিভাবে মার্কেট নিমার্ণের কাজ করে এটা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, সাংসদ ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। এখানে নাকি আওয়ামীলীগের পার্টি অফিস হবে। অথচ আমাদের এমপি মহোদয় এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
এমন অভিযোগে ভবন নির্মাণের শুরুতেই বাধা দেন আন্দিকোট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ভূমি অফিসের লোকজন। পরে বাঙ্গরা থানা পুলিশ এসেও ভবন নির্মাণে বাধা দেয়। এরপর মুরাদনগরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল সরকারি খাসের জায়গায় কাজ বন্ধসহ নির্মাণাধীন স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশও দিয়েছেন দখলদারদের।
কিন্তু কোনো কিছুতেই তোয়াক্কা করেনি দখলদাররা। বিষয়টি নিয়ে মুরাদনগরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল বলেন, সরকারি জায়গা কোন অবস্থাতেই কাউকে দখলে রাখতে দেয়া হবেনা। এক্ষেত্রে দখলদার যে-ই হোক তাদের কোন অবস্থাতেই ছাড় দেয়া হবেনা। আমি এখনি বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলব।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার অভিশেক দাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একবার তো আমরা কাজ বন্ধ করেছিলাম। এখন যদি তারা আবার কাজ শুরু করে তাহলে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীর জানান, যারা খাল দখল করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা অবশ্যই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবো।