কুমিল্লায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে অটোরাইস মিল!

কুমিল্লা-মীরপুর সড়কের বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের গাজীপুর-খাড়াতাইয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা এবং মডার্ন ইসলামিয়া স্কুল অ্যান্ড টেকনিক্যাল কলেজের পাশে আবাসিক এলাকায় স্থাপিত হচ্ছে মেসার্স জাহানারা অটো রাইস মিল নামে একটি কারখানা। ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নিয়ে এর নির্মাণ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে জনবহুল আবাসিক এলাকা এবং অন্যদিকে একশ’ গজের মধ্যে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকার পরও অটো রাইস মিল স্থাপনে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এলাকাবাসী। কারখানাটি অন্যত্র স্থানান্তরের দাবিতে দেড় শতাধিক গ্রামবাসীর স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র বিভিন্ন দফতরে জমা দেয়া হয়েছে।

অভিযোগপত্র ও কুমিল্লা পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বুড়িচং উপজেলার খাড়াতাইয়া গাজীপুর গ্রামের মো. আবদুল মান্নান ওরফে মোনাফ মেম্বারের ছেলে কামাল হোসেন মেসার্স জাহানারা অটো রাইস মিল স্থাপন করতে কুমিল্লা পরিবেশ অধিদফতরে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেন।

আবেদনের এক মাসের মধ্যে পার্শ্ববর্তী লোকজনের সঙ্গে কথা না বলেই ছাড়পত্র দিয়ে দেয় পরিবেশ অধিদফতর। জুন মাসের প্রথম দিকে স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করলে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। মিলটি অন্যত্র স্থাপন করার জন্য প্রথমে গ্রামবাসী মিল মালিকের বরাবরে লিখিতভাবে অনুরোধ জানান। মিল মালিক বিষয়টি কর্ণপাত না কারায় গ্রামবাসীর পক্ষে মিল সংলগ্ন বাড়ির সুরুজ মিয়া খন্দকারের ছেলে মো. জাকির হোসেন খন্দকার বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেন।

তার মধ্যে কুমিল্লা- ৫ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরু, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, কুমিল্লা পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক, বুড়িচং উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানা অফিসার ইনচার্জ ও স্থানীয় প্রেস ক্লাবে অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করেন।

এ বিষয়ে কুমিল্লা পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি জানান, মিলটির ছাড়পত্রের জন্য আবেদনের পর ইন্সপেক্টর নজরুল ইসলাম তদন্ত করে রিপোর্ট জামা দেয়ার পর প্রাথমিক পর্যায়ে ছাড়পত্র দেয়া হয়। অভিযোগ আসায় তিনি নিজে পরিদর্শন করে বুঝতে পারেন যে প্রথম রিপোর্টে কিছু ভুল ছিল। পরে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে সংশোধিত রিপোর্ট পেশ করেন বলে জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

বুড়িচং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিদা আক্তার জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে মিল এলাকাটি পরিদর্শনপূর্বক রিপোর্ট প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে মিলের স্বত্বাধিকারী কামাল হোসেন বলেন, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র এবং অনুমোদনের প্রেক্ষিতেই তিনি রাইস মিল স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে প্রায় দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব এ মিলে এলাকার কোনো ক্ষতি হবে না বলে তিনি জানান।

Share this post

PinIt
scroll to top